#শেষপর্ব
এই বট গাছের ছায়ায় তারা এসে জিরোতো।আর আমাকে রোজ এখানে দেখে দেখে একজন এর ভাল লাগে।
![]() |
পূর্ণিমা রাতে ভয়ংকর রুপে সে জেগে ওঠে |
তার সাথে আমার ভাব ভালবাসা হয়ে যায়।সে মানুষ আমি জানতাম কিন্তু আমি পরী এটা সে জানতো না।
আর আমিও তাকে একথা বলি নি যদি সে ভয় পাই।আমি আমার জাত ত্যাগ করে সেই মানুষ কে বিয়ে করি।বিয়ের পর খুব সুখি ই ছিলাম।
বিয়ের পর আমার একটি মেয়ে ও হয়।আমি পরী আমার যার সাথে বিয়ে হয় সে মানুষ হওয়াতে আমাদের মেয়ের কিছুটা চাল চলন পরীদের মতো আর কিছুটা মানুষের মতো হয়েছিলো।
কিন্তু আমার মেয়ের অস্বাভাবিক আচরণ দেখে আমার স্বামির খুব সন্দেহ হতো।ও ছোট বেলায় মানুষের বাড়িতে থাকতে চাইতো না।
এই বটগাছের কাছে একাই চলে আসতো।আবার এখানে এলে বাড়িতে যাওয়ার বায়না করতো।কাঁচা মাছ খেয়ে ফেলতো। সারারাত কাঁদতো।ওর এসব দেখে ওর বাবা একজন ওঝা কে ডাকেন। আর ওঝা এসে খুব ই সন্দেহ করেন।
তিনি যাদু মন্ত্র প্রয়োগ করে দেখেন আমি আর আমার মেয়ে দুজন ই পরী।
আমার স্বামি কে কুপরামর্শ দেন যে আমি বা আমার মেয়ে সবার ক্ষতি করবো।
আমি আমার স্বামির পায়ের ধরে বলেছিলাম আমি তোমাকে খুব ভালবাসি। আর আমার এখন কোনো শক্তি নেই।তোমাকে বিয়ে করার আগে ওসব শক্তি ত্যাগ করেছি আমি।
কিন্তু আমার স্বামির মনের সন্দেহ যায় না সে আমাকে মিথ্যা বলে এই বটগাছের কাছে এনে সেই ওঝার সাথে হাত মিলিয়ে প্রথমে আমার মেয়েকে পুড়িয়ে বোতলে ভর্তি করে।
তারপর আমাকে পুড়িয়ে বোতলে ভরে এই বটগাছের নিচে ভরে রাখে।
কিন্তু আমার আত্মা অতৃপ্ত হয়ে ওঠে। আমি প্রার্থনা করি আমার পরীর রাজ্য যেন আমাকে মহা শক্তি শালী করে মুক্তি দেন।
আর আমার মেয়ের জন্য প্রার্থনা করি।কিন্তু তারা বলেন এই বটগাছের নিচে যেদিন আবার এমন অন্যায় কাজ সৃষ্ট হবে মানুষের রক্ত পড়বে এখানে তুই অশরিরী হয়ে উঠবি পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ শক্তির অধিকারী হবি।
আর তোর মেয়েকেও বানাতে পারবি।কিন্তু আমি বলেছিলাম না আমার মেয়ে এই বোতলের মাঝে অনেক কষ্ট পাচ্ছে ওকে মুক্তি দেন।
তখন পরীর রাজ্য থেকে জানানো হয় তোর মেয়েকে কয়েকযুগ পর মানুষ এর পেটে পাঠাবো তারপর তোর মেয়ের সাহায্য তুই মুক্তি নিস।
আসিফ গল্পটা শুনে কাঁদছিলো আমার বোন আগের জন্মেও কষ্ট পেয়েছে।তখন ওই ভয়ংকর মহিলা বলে তার আগেই ওরা আমার মেয়েকে আরো কষ্ট দিছে।
এই গ্রাম কে জন মানব শূন্য করেই ফির বো।বলেই আসিফ কে তারা মেরে ফেলে।
এর পর একেক করে রকি সহ কেউ ই রেহায় পাই নি ওই আত্মার হাত থেকে।
নিজের মেয়ের সাথে হওয়া অন্যায়ের সব প্রতিশোধ ই নিয়েছে সে।
প্রতি পূর্ণিমা রাতে ভয়ংকর রূপ নিয়ে সে বিল থেকে উঠতো।
ওঝা ও তার কিছুই করতে পারে নি।তার সামনে যে পড়েছে সেই রেহাই পাই নি।
সব থেকে রকির মৃত্যু টা বেশী ভয়াবহ হয়েছিলো।
রকিকে আগুনে পুড়িয়ে পানিয়ে ডুবিয়ে মারা হয়েছিলো।দুই সন্তান হারিয়ে রকির মা বাবা পাগল।আসিফের মা বাবাও পাগল।
গ্রামে মহা আতঙ্ক।
সেই থেকে সেই বিলে আর কেউ মাছ ধরতে যায় নি।ঘটনাটা যারাই শুনেছিলো ভয়ে আর কেউ ওই বিলে যায় নি মাছ ধরতে।
তার পর থেকে গ্রামে কেউ ভুলেও মেয়েদের দিক কুনজর দিতো না।
একটা সময় গ্রমের মানুষ ওই বিলের পানিতে মণ মণ দুধ দিয়ে সেই আত্মাকে শান্ত রাখতো।কালের পরিবর্তনে একটা সময় সেই বিলের পানি শুকিয়ে যায়।
অশরীরা হয়তো সেখান থেকে অন্য জায়গা খুজে নেই।
#লেখাঃমৌসুমি।
0 comments:
Post a Comment