#পর্বঃ৫
চেনা পারফিউম টা ধীরে ধীরে উপরের দিকে যাচ্ছে। আমিও ওই পারফিউম এর পিছ পিছ গেলাম পারফিউম এর ঘ্রাণ টা আমার রুমে প্রবেশ করে।
পুরা রুম জুড়ে ঘ্রাণ টা ভরে আছে।
অনেক দিন আগে আমি এই ঘ্রাণ টা পেয়েছিলাম আমার বিশেষ এক পছন্দের মানুষের কাছে।যার কথা আজ ও ভুলি নি আমি।
রাতের আঁধারে ঠিক ই তাকে একবার হলেও মিস করি আমি।
কিন্তু ওর বেঈমানির জন্য ঘৃণা লাগে আমার।আমাকে ভাল বাসবে না বলে দিলেই পারতো।আমি তো আর জোর করতাম না ।
 |
| আত্মার ফেলে আসা ভালবাসা |
যখন ফার্স্ট ইয়ার পড়তাম কলেজ গিয়ে প্রথম নীল রঙের গাউন পরা তাকে দেখেছিলাম।মেয়েটি শ্যামলা রঙের ছিলো।অনেক শান্ত শিষ্ট ছিলো।মেয়েটি কে আমার পছন্দ হতো খুব।আরেক টা ক্লাস মেট ছিলো সে আমাকে খুব পছন্দ করতো। এক ই ক্লাসের দুইটা মেয়ে আমাকে ভীষণ ভাল বাসতো।আমাকে নিয়ে ওদের মাঝে রোজ অশান্তি হতো।যে মেয়েটা শ্যামলা ও একটুও হিংসুটে ছিলো না মনে মনে আমাকে ভীষণ ভালবাসতো।আর ফর্সা মেয়েটা শ্যামলা মেয়েটা কে খুব অপমান করতো।
শ্যামলা মেয়েটি নিরবে সব সহ্য করতো।আমার কাছে কারো সম্পর্কে আমার কাছে অভিযোগ তুলতো না। কিন্তু ফর্সা মেয়েটি আমার কাছে শ্যামলা মেয়েটি কে ছোট করার অনেক চেষ্টা করতো কিন্তু আমি সেগুলো বিলিভ করতাম না।শ্যাম বর্ণের মেয়েটি রোজ আমার পছন্দের জিনিস আমার ব্যাগে এনে রেখে দিতো কিভাবে জানতো সেটা আমি নিজেও বুঝতাম না।
আমার জীবনের প্রথম পছন্দ আর ভালবাসা ছিলো সে।আমি যে তাকে খুব ভালবাসি সেটা সে বুঝতে পারতো।আর আমাকে নিয়েই অশান্তির অগুনে ওই ফর্সা মেয়েটি জ্বলতে।সত্যি বলতে ওই ফর্সা মেয়েটি কে আমার একটুও ভাল লাগতো না।একটা সময় আমিও তাকে প্রপোজ করি তাকে দিন টি ছিলো খুব ই সুখের।কিন্তু তাকে যেদিন আমি প্রপোজ করি সেদিন তার আমার সাথে দেখা করতে আসার কথা ছিলো সারা বিকাল দাড়িয়ে ছিলাম আমি কিন্তু সে সেদিন অন্য একটা ছেলের সাথে পালিয়ে যায় আমার বুকটা ক্ষত করে।
সেদিন ভীষণ কষ্ট পেয়েছিলাম।আমি তাকে একটি পারফিউম গিফট করেছিলাম সে রোজ সেটা মেখে আসতো।ওই ঘ্রান টা যেন আমার নাকে সব সময় লেগে থাকতো।কিন্তু হটাত আজ সেই চেনা পারফিউম এর ঘ্রাণ টা পাচ্ছি।পুরণো ক্ষত টা জেগে উঠেছে আজ আমার।তার কথা খুব মনে পড়ছে।কিন্তু কোথা থেকে আসছে এই চেনা পারফিউম এর ঘ্রাণ।এর ই মাঝে মৌ নামের আত্মা টা বলে তুমি পুরনো প্রেমিকার জন্য কষ্ট পাচ্ছো কাঁন্না কাঁন্না সুরে বলছে।
এই আত্মার মায়ায় আমি পড়েছি কিন্তু সেই পুরণো ভালবাসা ও ভুলতে পারছি না।আমি তখন আত্মাটা কে বলি আমি কেনো তোমার মায়ায় পড়েছি জানো আমি যাকে ভালবাসতাম তার নাম ও মৌ ছিলো।আর তুমি যখন বললে তোমার নাম ও মৌ আমি কেমন যেন একটা মায়ায় আটকে যায়।তখন আত্মাটা বলে আমি জানি তোমার জীবনের সব ঘটনা। মৌ তোমাকে ফাঁকি দিয়ে চলে গেছিলো কিন্তু আমি যাবো না।আমি এই জীবন পরের জীবন সব জীবনের সাথি তোমার।এই আত্মাটা আমার পাশে থাকলে আমার এত টাই ভাল লাগে কেনো তা জানিনা।আমার সব কষ্ট নিমিষেই ভুলে গেলাম।
হটাত আমার মনে পড়ে যায় মায়া আর অহনার কথা।আচ্ছা কিসব কাকতালীয় ঘটনা ঘটে যাচ্ছে।এরা দুজন মৃত কিভাবে হলো।দেখি শপিং মলের ওই লোকটার দেওয়া ঠিকানার দিকে রওনা হলাম আমি।
লোকটার দেওয়া ঠিকানা টা ছিলো আমার প্রথম ভালবাসা শ্যামবর্ণের মৌ এর বাড়ির দিকে।যেতে যেতে হটাত ওদের বাড়ির সামনেই গাড়িটা নষ্ট হলো।কেমন যেন মনে হচ্ছিলো ও বাড়িতেই আছে।খুব ইচ্ছা হচ্ছিলো একবার ওর মুখ টা দেখে যায়।আজ হয়তো ওর দুই একটা বেবি ও হয়ে গেছে।কাছে গেলে হয়তো মামা বলে ছুটে আসবে।
একটু বাড়ির দিকে এগিয়ে গেলাম।শুনতে পেলাম কাঁন্নার আওয়াজ আসছে বাড়ির ভিতর থেকে। অনেক মানুষ ও দেখা যাচ্ছে কেউ হয়তো মারা গেছে এ বাড়িতে।যাক তাহলে নিশ্চিন্তে ঢুকতে পারবো।এত মানুষের ভীড়ে কেউ আর চিনবে না।হয়তো বা সে ও খেয়াল করবে না।
ভাবতে ভাবতে বাড়িতে ঢুকে দেখি দোয়া অনুষ্টান চলছে।নিশ্চয় কেউ মারা গেছিলো তার অনুষ্টান।মৌ কে আমার দু চোখ পাগলের মতো খুজছে কিন্ত কোথায় সে। মৌ এর মা পাগলের মতো কাঁদছে।মৌ এর বাবা ও খুব কাঁদছে। মৌ এর মা বাবা অনেক কাঁন্নাকাটি করছে।কিন্তু কার জন্য কিছুই বুঝছি না।
হটাত আমি যা দেখলাম তার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।এত রহস্য কেনো চারদিকে।
#লেখাঃমৌসুমি
0 comments:
Post a Comment