(সব সময় নিজের পছন্দ সঠিক নাও হতে পারে।আমরা ভুল মানুষকে অনেক সময় ভাল বেসে ফেলি এই পর্ব থেকে বাকি পর্ব গুলাতে পাবেন)
কাল পিহু আপুর বিয়ে। বাড়ির সবাই মহা আনন্দে আছে।এদিকে বিয়ের দিন সকালে পিহু আপুর অনুরোধ এ পিহু আপুকে পরশ ভাইয়ার সাথে দেখা করাতেই হবে।হাজার টা চিন্তা মাথায়।দেখা করানো টা ঠিক হবে না ভুল হবে বুঝে উঠতে পারছিলাম না।
গায়ে হলুদের অনুষ্টান শুরু।শান্ত এসে আমার গালে হলুদ মাখিয়ে দিলো।আর বললো এত সুন্দর ভাবে সেজেছো কেনো সবাই হা করে চেয়ে আছে।শান্ত অনেক বার আমাকে অনুরোধ করেছে আমার মুখে ভালবাসি কথাটি শোনার জন্য।এতদিন আমি ওর ভালবাসা বুঝেও না বোঝার ভান করে থাকতাম।আজ আমার ও মনটা বড় উতালা ইচ্ছা করছে চিৎকার দিয়ে শান্ত কে বলি আমি তোমাকে বড্ড ভালবাসি।কিন্তু লজ্জায় সেটা পারছি না।এদিকে শান্তর বোনের বিয়েতে ওর অনেক বন্ধু চাচাতো ভাইয়েরা এসেছে।তাদের মাঝে একজন তনু ভাইয়া আছে সে অনেক দিন ধরেই আমাকে একটু আধটু করে পছন্দ করতো।গায়ে হলুদের অনুষ্টানে আমি হলুদের পোশাক পরেছি শান্ত অপলক দৃষ্টি দেখছে ওর যেন দেখার ক্ষুদা মিটছেই না।
![]() |
একাত্ম ভালবাসা |
পিহু আপুর হলুদ সন্ধা অনুষ্টান শুরু হলো। আউট হাউজে সুন্দর করে সাজানো হয়েছে সেখানে নাচ গানের আসর জমেছে।সবাই সেদিকে বিজি আছে।এদিকে তনু ভাইয়া আমার হাত ধরে হেঁচকা টান দিয়ে আমার সাথে অসভ্যতা করার চেষ্টা করছিলো সেটা আবার শান্ত দেখে নেই,,,শান্ত দেখেই তনুর দুই গালে ঠাসসসস শব্দে দুইটা মেরে দেই আর বলে কাল বিয়ের অনুষ্টান মিটে যাক তোর বিচার আমি নিজে করবো।তনু শান্তর হাতে পায়ে জড়িয়ে ধরে মাফ চাই,,,কিন্তু আমি জানতাম আমাকে স্পর্শ করেছে এতে শান্তর মাথায় খুন চড়ে যাবে ও কিছুতেই তনু কে ক্ষমা করবে না।মারামারি,,,কোপানো এসব শান্তর রোজকার অভ্যাস তাই বাড়াবাড়ি কিছু করার আগে আমি শান্ত কে টেনে বাড়ি তে নিয়ে আসি।আমি শান্তকে বলি প্লিজ ঠান্ডা হও।শান্তর চোখ মুখ দিয়ে ভয়ানক অগ্নিশিখা বেরোচ্ছে এই রাগ না কমালে আবার কি একটা বাধিয়ে জেলে যাবে।আমি কোনো উপায় না পেয়ে শান্তকে ওর নিজের রুমে নিয়ে গেলাম।বাড়িটা পুরাই ফাঁকা প্রকৃতি আমাকে ইশারা করছে শান্তকে ভালবাসার জন্য।শান্তর রাগ ওই মূহুর্তে ঠান্ডা করার মেশিং ওই একটাই পথ আছে আমাকে ওর ভালবাসার প্রতি উত্তর টা দিতে হবে।আমিও তোমাকে ভালবাসি প্রিয়।
রাগি আগুন পাখি শান্ত বেড এ বসে আমি ওর পায়ের নিচে বসে বললাম একবার আমার দিকে তাকাবে,,,, কিন্তু ও কিছুতেই আমার দিকে চাইছে না,,,
এই শোন তুই দূর হ আমার চোখের সামনে থেকে।সব সময় তোর বাড়াবাড়ি এ ভাইয়া সে ভাইয়া তোর কি ভাইয়াতে মন ভরে না।আমি না কতদিন তোকে নিষেধ করেছি ওদের সাথে মিশবি না।ওরা তোর দিকে খারাপ নজর দেই।আমি বলেছিলাম না আমার আশে পাশে থাকবি তুই।একটা চড়ে তোর গাল লাল করে দিই।
শান্ত রেগে মেগে আমাকে এক গাল কথা শুনিয়ে দিলো।
ইসসসস কি সাহস মারবে আমি বুঝি বসে থাকবো আমাকে মারলে।
আহহহহহ কি আমি না তোর বড় তুই আমার গায়ে হাত তুলবি।
হ্যা আমার গায়ে হাত দিলে আমিও দিবো।
অমনি শান্ত ঠাসসস শব্দে মোটামুটি কম ব্যাথার একটা চড় কষিয়ে দিলো।
আমি সাথে সাথে উঠে তবে রে বলে শান্তর ঠোঁটে আলতো করে একটা কিস করে দিলাম।শান্তর হার্টবিট সেকেন্ডে কত কিলোমিটার এ বইছিলো সেটা শান্ত নিজেই বুঝছিলো না।বুকের মাঝে ধুকপুকানি শব্দ হচ্ছিলো।নদীর দুপাশ ভাঙনের শব্দ শান্তর কানে বাজছিলো।কারন সে এটা আশা করে নি।আর এটা কখনো হতে পারে শান্তর কল্পনার বাইরে ছিলো।এটা কি একটা শুধুই কিস ছিলো নাকি শান্তকে কন্ট্রোলহীন করার অস্ত্র ছিলো।এক মিনিটে শান্তর ভাবনার জগত আর রাগ সব হাওয়ায় মিলিয়ে গেলো।
কি হলো ও গুন্ডা।
শান্ত এক নজরে চেয়ে আছে আমার দিকে।তুমি কি কিচ্ছুক্ষণ আগে আমাকে কিস করেছিলো।
কেনো তুমি বুঝতে পারো নি।
ওয়েট আবার করছি বলেই উম উম করে ওর চোখে মুখে ছোট ছোট অনেক গুলা চুম্বন এঁকে দিলাম।নিমিষের শান্ত নিজেকে হারিয়ে ফেলে কারণ ওর কাছে বহুপ্রতাাশিত এই মুহূর্ত টা। ওর আস্তে আস্তে আমার হাত টা ধরে আমার নিঃশ্বাস এর কাছে চলে আসে গলা কাঁপাকাঁপা গলায় সে আমাকে বলে তুমি আমাকে কিস করে খুন করে ফেলেছো।আমি শান্তর কানে কানে বলি আমি তোমাকে ভালবাসি শান্ত বড্ড ভালবাসি।শান্ত সাথে সাথে আমাকে উচু করে ধরে বলে তুমি জানো আজ আমি পৃথিবীর সব থেকে হ্যাপি মানুষ এই মোমেন্ট টা এই রুমে নয় স্পেশাল কোথাও গিয়ে কাটাতে চাই।
শান্তর বাইকে সেদিন রাতে সেই কাশবনে গিয়েছিলাম।দুজনে হাত ধরে বসে অনেক গল্প করেছিলাম।নিজেদের একাত্ম সময় টা আর ভালবাসার সাক্ষি হিসাবে আকাশের চাঁদ টা ছিলো।শান্তর বুকে মাথা রেখে আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় টা কাটিয়েছিলাম।আমাদের ভালবাসা সেদিন পূর্ণতা পেয়েছিলো।
হাতে হাত ধরে দুজনে প্রমিজ করেছিলাম মৃত্যুর আগে দুজন দুজন কে ছাড়বো না।
ভালবাসা ময় হয়ে উঠেছিলো দুজনের পৃথিবী।
ভালবাসা ময় হয়ে উঠেছিলো দুজনের পৃথিবী।
কিন্তু কথায় আছে সুখ বেশী দিন কারো কপালে সহ্য হয় না।আমার ক্ষেত্রে ও ঠিক তাই হয়েছিলো।
দুজনে ভোর রাতে বাসায় ফিরলাম।
এদিকে পিহু আপু কে নিয়ে বাইরে যেতে হবে পরশ ভাইয়ার সাথে দেখা করানোর জন্য।বাড়ির কাউকে বললে রাজি হবে না।তাই দুজনে লুকিয়ে লুকিয়ে গেলাম।যে সকাল ৮ টার আগে ফিরে আসবো সবাই ঘুম থেকে ওঠার আগেই।
পরশ ভাইয়ার ফ্রেন্ড রা বাইক নিয়ে এসেছিলো তাতে উঠেই আমরা চলে যায়।পিহু আপু একান্তে কিছু কথা পরশ ভাইয়ার সাথে কথা বলতে গিয়ে আর আসে না।যেখানে ৮ টায় ফেরার কথা সেখানে ১০ টা বেজে গেছে ওরা আর ফিরেই আসে না।এদিকে বরযাত্রী ১২ টায় আসবে বাসায় সবাই খোজাখুজি শুরু করেছে হয়তো।আমি পিহু আপুকে খুজেই যাচ্ছি আর ফোন ও অফ বলছে চিন্তায় আমার ঘাম বেরোচ্ছে।আপু এতো টা লেট করছে কেনো?এদিকে ১২ টা বেজে গেলো পিহু আপু আর ফিরে এলো না।কিছুক্ষণ পরে আমার ফোনে একটা মেসেজ এসছে মৌ আমার জন্য আর ওয়েট করিস না আমি বিয়ে করে নিয়েছি আর পরশ এর সাথে অনেক দূরে কোথাও হারিয়ে যাচ্ছি।আব্বু আর ভাইয়া পরশ কে পেলে মেরে ফেলবে তাই আমি দূরে পালিয়ে গেলাম।আমাকে মাফ করে দিস আমি তোকে মিথ্যা বলে ঠকিয়ে চলে এসছি।তোকে মিথ্যা না বললে আমাকে হেল্প করতি না।নিজেকে ভীষণ অপরাধী লাগছে আমার জন্য মামা মামির শান্তর মান সম্মান সব নষ্ট হলো।
মন খুব ভারী করে বাড়িতে ফিরলাম।বাড়িতে এলেই সবাই আমাকে বলছে জানিস পিহু কে খুজে পাওয়া যাচ্ছে না।
এদিকে বরযাত্রী চলে এসছে পিহু আপুকে খোজার জন্য চারদিকে লোক পাঠানো হয়েছে।
এদিকে বরযাত্রী চলে এসছে পিহু আপুকে খোজার জন্য চারদিকে লোক পাঠানো হয়েছে।
এর ই মাঝে শান্ত আমাকে হাত ধরে ডেকে নিয়ে বাগানে নিয়ে ঠাসসসসস শব্দে দুই গালে দুই চড় মেরে দেই।আর একটা চিঠি আমার হাতে তুলে দেই।
চলবে,,,,,,
0 comments:
Post a Comment