#পর্বঃ৭
অহনার মৃত্যু নিয়ে লোকটি বললো অহনার তাদের ই গ্রামের একটি ছেলের সাথে রিলেশন ছিলো।ছেলেটি অহনার সাথে শারিরীক সম্পর্ক করে বিদেশ চলে যায়।এর মাঝে অহনা ও প্রেগন্যান্ট হয়ে যায়।বিদেশ গিয়ে সেই ছেলেটি যোগাযোগ রাখে নি।অহনার বাবা সেই ছেলেটির পরিবারের কাছে যায় আর অনেক রিকুয়েষ্ট করে তার মেয়েকে তারা যেন গ্রহন করে।
এটা সব জায়গা জানাজানি হওয়া তে অহনার পরিবার লজ্জায় কোথাও মুখ দেখাতে পারে না।মান সম্মান নষ্টের জন্য পরিবারের সবাই গালি গালাজ বকা ঝকা যা ইচ্ছা করতো অহনার সাথে। এদিকে গ্রামের মানুষ তাদের গ্রাম থেকে বেরিয়ে দিবে সেই হুমকী দিতো।গ্রামের মানুষ শাস্তি হিসাবে অহনা কে ১০০ বেতের বাড়ি মারে।কারণ সবাই ভাবছে অহনার চরিত্র ভাল না। সে সব ছেলেদের সাথে এসব করে বেড়ায়।
![]() | |
|
মনের কষ্টে আর প্রেমিকের করা ছলনার জন্য অহনা গলাই দড়ি দিয়ে মারা যায়।
কিন্তু মারা যাওয়ার পর অহনার আত্মা অনেক ভয়ংকর হয়ে ওঠে। ওর সাথে হওয়া অন্যায় এর প্রতিশোধ নিতো সে।কারণ কেউ সেদিন তাকে বিশ্বাস করে নি।
রোজ রাতে ভয়ংকর সাউন্ড করে গ্রাম দিয়ে ঘুরতো।রোজ কারো না কারো সামনে পড়তো ওর আত্মা।সাদা শাড়ি পরে মুখের ভয়ংকর চেহারা নিয়ে হুট যে কারো সামনে চলে যেত।যারা ওর সাথে অন্যায় করেছে তাদের খুব কষ্ট দিয়ে গাছে দড়ি দিয়ে ঝুলিয়ে মেরেছে।
একদিন রাতে গ্রামের কয়েক টা লোক রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে।হটাত তারা দেখে তাদের সামনে কেউ দাঁড়িয়ে আছে। তারা সামনে দিকে কে সেটা দেখতে দেখতে তারা খেয়াল করে তাদের পিছনে কেউ এক রশি তে তাদের মাথা ভরে টান দিছে।আর টান দিতেই তারা দেখে উচু হয়ে গেছে। রশি টা কোনো গাছের সাথে বাধা নেই অথচ হাওয়ায় তাদের গলা এটা থাকে।পরের দিন সকালে গ্রামের লোকজন দেখে হাওয়ায় রশি দিয়ে ঝুলানো কয়েক টা লাশ।
এর পর ই গ্রামে একটা দোয়া অনুষ্টান এর কাজ করা হয়।সেখানে মাংশ ভাত এর আয়োজন করা হয়।বাইরে থেকে বাবুর্চি আনা হয়।গ্রামের সব মানুষের খাওয়া শেষ হলে বাবুর্চি বলে গ্রামের মোড়ল সহ যারা অন্যায় ভাবে মানুষ কে শাস্তি দেই আজ তারাই আপনাদের পেটে কেমন লাগলো খেয়ে।বলেই বিদঘুটে হাসি তার আর সাথে সাথেই উধাও হয়ে যায় সে।
গ্রামের সব মানুষ বমি করতে থাকে যে তারা মানুষের মাংশ খেয়েছে।ওই বাবুর্চি যেখানে রান্না করেছে সেখানে সবাই গিয়ে দেখে একটা রক্ত মাখা পলিথিন যার ভিতরে গ্রামের কয়েক জন মাতব্বর এর মাথা কাটা।কারো আর বুঝতে কিছু বাকি থাকে না যে এদের মাংস তারা খেয়েছে।
মানুষের মাংস খাওয়ার মতো বিশ্রি কাজ হয়তো আর দ্বিতীয় টি পৃথিবীতে নেই।কিন্তু তখন মানুষের মনে ঘৃনার চেয়ে আতংকের সৃষ্টি হয় বেশী। মানুষ তখন মাংশ খাওয়ায় ছেড়ে দিয়েছিলো কারণ রোজ কারো না কারো কাটা মাথা পাওয়া যেত আর সেটা কারো না কারো কড়াই এ রান্না হতো।খাওয়ার পরে মানুষ জানতো সেটা কোনো মানুষের মাংশ।কারণ ওই আত্মা কোনো না কোনো ভাবে ঠিক জানিয়ে দিতো।
যে ছেলেটা অহনার সাথে বেঈমানি করে বিদেশ চলে যায় তার লাশ টা গ্রামের মাঝ খানে একদিন সবাই পাই।মেইন রাস্তার উপর হাওয়ায় তার কাটা মাথা আর দেহ ঝুলছিলো।
ওই ছেলেটার বাড়িতে একদিন আত্মীয় আসে। ওই দিন মাংশ রান্না হয় আর অহনার আত্মা ওই দিন সবাই কে মাংশ খাওয়ার পরে বলে আপনাদের ছেলের মাংশ কেমন লাগলো।ওর রক্ত আমি খেয়েছি আর মাংশ আপনারা খেলেন।আর কাল রাস্তায় ওর মাথা আর বডি টা দেখছিলেন ওটা আমি মাটির নিচ থেকে খুড়ে রান্না করে দিলাম বলেই কি হাসি যে হাসিতে মানুষের হার্ট এট্যাক হবে নিশ্চিত ভাবে।৷
তার পর গ্রামে অনেক বড় হুজুর এনে অহনার আত্নাকে বন্দী করে ওর আত্মাকে গ্রাম থেকে দূরে রাখা হয়।সেই হুজুর টা না জানি কোথায় নিয়ে অহনার আত্মাকে বেধে রেখেছে।
আমার শরীরের লোম গুলো খাড়া হয়ে গেছিলো ভয়ে।এভাবে ভয়ংকর মৃত্যুর কথা শুনে।আমি অহনার বাবাকে বলি আপনি আমার সাথে চলুন প্লিজ।আপনাকে আমার খুব প্রয়োজন। আমি অহনার বাবাকে নিয়ে বাড়িতে ফিরছিলাম।
আমি সেদিন যে সিসুয়েশন এ ছিলাম সেটা শুধু আমি জানি।আমার সামনে যেসব ঘটনা গুলো আসতেছে তাতে আমার পাগল হওয়া মতো অবস্থা। আমার কাছে মনে হচ্ছিলো কিছু একটা গন্ডগোল হয়েছে।অহনার আত্মা কে হুজুর যদি আটকে রাখবে তাহলে আমাদের বাড়িতে কিভাবে গেলো অহনার আত্মা।সব রহস্য গুলো কিভাবে জানবো আমি।
এর পর বাড়িতে গেলাম।অহনার বাবা অহনা কে দেখে অবাক।এটা তো সত্যি আমার মেয়ে।অহনার বাবা ছুটে গিয়ে অহনাকে জড়িয়ে ধরে মা তুই এখানে।অহনা উনাকে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দেই।কে আপনি ফাউল লোক একটা। এভাবে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলেন।কে আপনার মেয়ে হ্যা।না জেনে না বুঝে এসেই মেয়ে বললেই হয়ে গেলো।
অহনার বাবা সিঁটকে সিড়ি দিয়ে পড়ে অনেক খানি কেটে যায় তার।আমি দ্রুত তার ড্রেসিং এর ব্যবস্থা করি।আমি লোকটি কে বলি আপনি কষ্ট পেয়েন না।আত্মা তো তাই চিনছে না।তখন অহনার বাবা বলে আমার অহনা আত্মা হয়ে রোজ আমার সাথে গল্প করতো।আমাকে কেউ কিছু বললে প্রতিবাদ করতো।বাবা কিছু একটা গন্ডগোল আছে যেটা তুমি বুঝছো না।
আসলেই আমি বুঝছিলাম না কি করবো।
এদিকে আবার মায়া। ওই মেয়েটা সব থেকে বেশী অদ্ভুত আর রহস্য জনক।মায়া কে দেখলেই আশ্চর্য লাগে আমার।
আসলে আমি যেদিন শপিং মলে যায় মায়া আর অহনা কে নিয়ে সেদিন প্রথমে একটি লোক আমাকে মায়ার কথা বলে সে মারা গেছে অনেক দিন আগে।
পাশ থেকে আরেক টি লোক আমাকে অহনাকে দেখিয়ে বলে ও আপনাকে মেরে ফেলবে। ও খুব ভয়ংকর আত্মা।ওর গ্রামের ই ছেলে ছিলো সে।যে নিজ চোখে অহনার হত্যা তান্ডব দেখেছে।আবার পাশের বাসার আন্টি ও বললো অহনার ব্যাপার টা।ওর বিষয় তো অনেক খানি জানলাম।
কিন্তু এই মায়া এর ব্যপারে কিভাবে জানবো।আজ আমি নিজেই মায়ার কাছে জানতে চাইবো কে তুমি
#লেখাঃমৌসুমি
(ভাল লাগলে অবশ্যই জানাবেন।লাইক কমেন্ট করে পাশে থাকবেন।)
0 comments:
Post a Comment